দুটি উপজেলায় প্রায় ৫০০ হেক্টর জমির পাট সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয়েছে বলে কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে।
বোয়ালমারী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, শিলাবৃষ্টিতে উপজেলার ২ হাজার ১৩৫ হেক্টর জমির পাটের ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরমধ্যে সম্পূর্ণভাবে বিনষ্ট হয়েছে প্রায় ৪০০ হেক্টর জমির পাট।
বোয়ালমারী উপজেলায় এবছর ১৪ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ করা হয়েছে। এছাড়া ৭৩ হেক্টর জমির ধান, ১২ হেক্টর জমির মরিচ, সাড়ে ৯ হেক্টর জমির তিল ও ১৫ হেক্টর জমিতে রোপন করা শাকসবজি শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, একই সময়ে মধুখালী উপজেলার আশাপুর ও পৌরসভা সদরের কিছু এলাকার ১১১ হেক্টর জমির পাটের খেতের ফসল সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয়েছে।
বোয়ালমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রীতম কুমার হোড় বলেন, রবিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। এরমধ্যে বোয়ালমারীর সাতৈর ও ঘোষপুর ইউনিয়নে ক্ষতির পরিমাণ বেশি।
তিনি জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। শেখর, চতর ও দাদপুর ইউনিয়নসহ বোয়ালমারী পৌর এলাকারও বিভিন্নস্থানে কৃষি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ঘোষপুর গ্রামের আশুতোষ বিশ্বাস জানান, তিনি ১২ পাখি জমিতে পাটের আবাদ করেছিলেন। শিলাবৃষ্টিতে পুরো জমির পাট নষ্ট হয়ে গেছে।
সাতৈর ইউনিয়নের কাদিরদি গ্রামের পাট চাষি নুরুল ইসলাম মোল্যা বলেন, তিনি ৯ পাখি জমিতে পাটের চারা বুনেছিলেন। শিলাবৃষ্টিতে তার খেতের সব পাটের চারার মাথা ভেঙে গেছে। এখন এই ক্ষতি কিভাবে পুষিয়ে উঠবেন সেই দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
সাতৈর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মজিবুর রহমান বলেন, আকস্মিক এ শিলাবৃষ্টিতে খেতের পাটগুলো মাঠের সাথে মিশে গেছে। পাটের চারার মাথা ভেঙে গেছে। ঝড়ে অনেক জমির পাকা ধান মাটিতে শুয়ে গেছে।
এছাড়া শতাধিক কাঁচা-পাকা ঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ঝড়ো বাতাসে। সবমিলিয়ে তার ইউনিয়নে প্রায় ১ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানান তিনি।
ফরিদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, ‘দুই উপজেলায় প্রায় ৫০০ হেক্টর জমির পাটের ফসল সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয়েছে। তাদেরকে আমরা অন্য ফসল চাষের পরামর্শ দিয়েছি। সরকার কোনও প্রণোদনা দিলে এসব ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সেই সুবিধা প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে।’